Monday, 19 June 2017

অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে পড়ে স্বাস্থ্য খাত নষ্ট হয়ে গেছে ডাঃ প্রাণ গোপাল ।চান্দিনার বার্তা:সেয়ার করে জানিয়ে দিনg

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেছেন, দেশের স্বাস্থ্য খাত অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে এবং তা নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেন আমাদের দেশে এসে বলেছিলেন, শিক্ষা আর চিকিৎসা যদি পণ্য হয়ে যায় তবে তার গুণগত মান ঠিক থাকে না। আর এখানে চিকিৎসাকে সরকারই পণ্য বানিয়ে দিয়েছে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত ও ভোক্তা অধিকার’ শীর্ষক সেমিনারে এই একথা বলেন তিনি। ক্যাবের চেয়ারম্যান গোলাম রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মুস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক শফিকুল ইসলাম লস্কর প্রমুখ। ডা. প্রাণ গোপাল বলেন, শিক্ষা আর চিকিৎসা যখন বাণিজ্যে পরিণত হয়— তখন দেশের উন্নতিও নষ্ট হয়। ফলে উন্নতি সাধনের জন্য এ খাতে বিশেষ নজর বাড়াতে হবে। প্রবীণদের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের মূল্য কমানো এবং তাদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসাব্যবস্থা আগে সরকারের হাতে ছিল বিধায় একজন গরিবের ছেলে ঢাকা মেডিকেলের প্রফেসর হয়েছে। এখন একজন জর্দা ব্যবসায়ী একটা মেডিকেল কলেজের মালিক হয়ে গেছেন, একজন চিকিৎসক একটা মেডিকেল কলেজের মালিক হয়ে গেছেন। এখন তো তার গুণগত মান থাকবে না। কারণ এই গুণগত মান মনিটর করার যার দায়িত্ব, সেটাতো আর হচ্ছে না। এ সময় তিনি চিকিৎসা ক্ষেত্রে অবনতির জন্য সব দায় ডাক্তারদের না দেওয়ার জন্যও অনুরোধ করেন। মূল প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন ক্যাবের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য মতে, কোনো দেশে কোনো নাগরিকের স্বাস্থ্য ব্যয় তার সামগ্রিক ব্যয়ের ৩০ শতাংশের বেশি হলে, সেই দেশে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল বলে বিবেচিত হয়। অথচ বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তিগত ব্যয় ৬৩ শতাংশ। নাজের হোসেন বলেন, বৃদ্ধ ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারিত করার পাশাপাশি বেসরকারি খাতে স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন। ক্যাবের সহ-সভাপতি বলেন, জনগণকে স্বাস্থ্য সচেতন করতে হবে। একইসঙ্গে জাঙ্কফুড ও তামাকজাত পণ্যের মতো অস্বাস্থ্যকর খাদ্য পণ্যে আসক্তি কমাতে সেগুলোর ওপর কর বাড়াতে হবে। অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, আমাদের নিজ নিজ দায়িত্ব মানা উচিত। তা না হলে দেশের কোনো খাতে উন্নয়ন হবে না। আর স্বাস্থ্যসেবায় উন্নতি করতে হলে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার নিয়ম মানা প্রয়োজন। মেজর জেনারেল মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়ন সাধনের জন্য ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর অনেক বড় ভূমিকা পালন করছে। কার্ডিয়াক সার্জারিতে আমরা এখন অনেক উন্নয়ন করেছি। সারা দেশে মডেল ফার্মেসি করার উদ্যোগ নিয়েছি। ইতিমধ্যে ১৭ জেলায় মডেল ফার্মেসি স্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ফার্মেসি দোকানগুলোকে লাইসেন্সের আওতায় আনার কার্যক্রম চলছে। আমাদের সমস্যা আছে; ভোক্তা পর্যায়েও সমস্যা আছে। এ সমস্যা দূরীকরণে ভোক্তাকে অধিকার সম্পর্কে জানাতে হবে। একইসঙ্গে সচেতন করতে হবে।

1 comment: