Thursday, 13 July 2017

মন্ত্রিসভায় রদবদলের আভাস:বাদ পড়ছেন যারা, নতুন ঢুকছেন।চান্দিনার বার্তা:সেয়ার করে জানিয়ে দিন



নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নবীন প্রবীণের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী মন্ত্রীসভা গঠনের চিন্তা ভাবনা করছেন প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের একাধিক দ্বায়িত্বশীল সুত্র এমনটি আভাস দিয়েছেন, জানা গেছে, চলতি মাসেই মন্ত্রিসভায় এই যোগ বিয়োগ হবে। সরকারকে আরও সক্রিয় রাখতেই মন্ত্রীসভা গঠনের জন্য প্রধানমন্ত্রী ফাইল ওয়ার্ক করছেন। নিজস্ব উইং দিয়ে সম্ভাব্য মন্ত্রীদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। একটি খসড়া তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন প্রবীন নেতা ও অপেক্ষাকৃত উদ্যমী তরুণ নেতাকে এবারের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তকরণের বিষয়টিও একরকম চূড়ান্ত করেছেন। এ যোগ বিয়োগের প্রক্রিয়ায় বাদ পড়তে যাচ্ছেন কমপক্ষে এক ডজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী। দলীয় হাইকমান্ডের বরাত দিয়ে নেতৃ-স্থানীয় একাধিক সুত্র এ কথা জানায়।

সূত্র জানায়, বর্তমান সরকারের চলতি মেয়াদে এটাই হবে মন্ত্রিসভার সর্বশেষ যোগ বিয়োগ। বিভিন্ন অভিযোগে বিতর্কিত এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে এমন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বাদ দেয়ার বিষয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীই সংশ্লিষ্টদের আকার-ইঙ্গিতে সংকেত জানিয়েছেন। সূত্র মতে, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত মন্ত্রিসভা থেকে ছিটকে পড়তে পারেন। তবে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন দ্বায়িত্বশীল সিনিয়র মন্ত্রী জানান, মুহিত এ যাত্রায় রক্ষাও পেতে পারেন।

এ ছাড়া বাদ পড়ার তালিকায় ত্রান, দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ধর্ম মন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমা্‌ন, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, মৎস্য মন্ত্রী সায়েদুল হক ও পাট মন্ত্রী এমাজউদ্দীন প্রামানিক ভূমি মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু, টেকনোক্রেট কোটায় হওয়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, আরিফ খান জয়, যুব ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বন পরিবেশ উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল জ্যাকব। ব্যাংক সেক্টরে ব্যর্থতার জন্য এবং অতিরিক্ত বয়সজনিত কারনে মুহিত আর থাকছেন না এমনটি অনেকটাই নিশ্চিত করেছেন তার সহকর্মীরা। মায়া, কামরুল, আকম মোজাম্মেলের আদালত জনিত সমস্যা রয়েছে। বয়স জনিত কারনে এমাজউদ্দীন প্রামানিক, অধ্যক্ষ মতিউর রহমা্‌ন বাদ পড়বেন, ছেলে গ্রেফতার হওয়ার কারনে শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর কপাল পুড়ছে।

অন্যদিকে, নতুন করে এবারের মন্ত্রী সভায় যোগ দিতে পারেন, দলের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, সাবেক ডেপুটি স্পীকার অধ্যাপক আলী আশরাফ, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল (অবঃ) মোহাম্মদ ফারুক খান, সাবেক মন্ত্রী ডঃ আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক মন্ত্রী ডঃ দীপু মনি, সাবেক মন্ত্রী ডঃ হাসান মাহমুদ, আখম জাহাঙ্গীর হোসাইন, সাবেক মন্ত্রী তালুকদার আব্দুল খালেক, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এপিএস আফম বাহাউদ্দীন নাসিম এমপি, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও ইসরাফিল আলম, সিলেটের নেতা, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। পদ্মা সেতু থেকে বিশ্ব ব্যাংকের অভিযোগ প্রত্যাহার হওয়ায় সৈয়দ আবুল হোসেনের ভাগ্য আবারও খুলছে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভালো ভুমিকা রাখার জন্য ফারুক খান, ডক্টর আব্দুর রাজ্জাক, বিশ্বস্ততার পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হবার জন্য শেখ সেলিম, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, দিপু মনি, বি এম মোজাম্মেল ও খালিদ মাহমুদের ভাগ্য খুলছে।

সিলেট থেকে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীকে নতুন মন্ত্রীসভায় দেখা যাবার কথা শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বিদায় নিলে রাজশাহী বিভাগে ব্যালান্সের জন্য মন্ত্রীসভায় ইসরাফিল আলমকে দেখা যাবে, এমনটি আভাস দিয়েছে সংশ্লিষ্ট সুত্র। নতুন মুখ হিসাবে টেকনোক্রেট কোটায় মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন, আওয়ামী লীগের উপদেস্টা পরিষদ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ডঃ মশিয়ুর রহমান ও মোজাফফর হোসেন পল্টু। ডঃ মশিউর রহমানকে অর্থ মন্ত্রী এবং মোজাফফর হোসেন পল্টু যুব ক্রীড়া মন্ত্রী, এমপি ইসরাফিল আলম স্বরাষ্ট্র কিংবা শ্রম প্রতিমন্ত্রী হিসাবে বিবেচনায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।

৯৬ এর সাবেক প্রতিমন্ত্রী তালুকদার আব্দুল খালেকের মন্ত্রীসভায় আসার উজ্জ্বল সম্ভবনা রয়েছে। বাগেরহাটের রামপালে তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারনে নানা দিক বিবেচনা করে খালেককে এবারও মন্ত্রী করা হবে বলে জানা গেছে। এর বাইরেও কুমিল্লা থেকে নির্বাচিত এমপি এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এর নাম শোনা যাচ্ছে । মন্ত্রী ছিলেন এমন একজন যুগ্ম সম্পাদক এবং বর্তমানে সাংগঠনিক সম্পাদকের পদে রয়েছেন এমন একজন প্রভাবশালী এমপি মন্ত্রীসভায় আসার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। এই বিষয়ে জানতে চাইলে একাধিক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, বিষয়টি স্পর্শকাতর। রদ বদলের বিষয়টি একান্তই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তিনি আমাদের অভিভাবক, আমাদের সবার আমলনামাই তার গভীরভাবে জানা রয়েছে। নেতারা আরও বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা চাইলে আমরা দ্বায়িত্ব নেবো। তেমনি মন্ত্রীসভায় না রাখলে দলের যে দ্বায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী দেবেন, সেই দ্বায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে তারা পালন করবেন।

No comments:

Post a Comment