Wednesday, 4 January 2017


শাহীন আলম, কুমিল্লা ( দেবিদ্বার ) প্রতিনিধি

দেবিদ্বার সুজাত আলী সরকারি কলেজ হোস্টেল নানা সমস্যায় দিন দিন অরক্ষিত হয়ে পড়েছে, হোস্টেলের কিচেন, ডাইনিং, টয়লেট, সিঁড়ি, নামাযের ঘর, টিভি রুম অপরিস্কার-অপরিচ্ছন্নতায় ভোগছে দীর্ঘদিন। ছাত্রদের প্রতিটি কক্ষ যেন ময়লা আর বালির স্তুপে  একাকার।
অধিকাংশ বাথরুম, টয়লেটের দরজা, পয়:নিষ্কাশনের পাইপ, কমেড, বেসিন, পানির টেপ ভেঙ্গে অকেজো হয়ে পড়ে আছে র্দীঘদিন। যেগুলো ব্যবহার উপযোগী সেগুলোও এখন স্যাতেস্যাতে, অপরিস্কার হওয়ায় ব্যবহারের অনুপোযোগী। দীর্ঘদিন দেয়াল মেরামত ও রংয়ের ছোঁয়া না পড়ায় খসে পড়ছে ছাদ ও দেয়ালের প্লাস্টার। হোস্টেলের সীট, চেয়ার ও বেঞ্চ ভেঙ্গে পড়ে আছে এদিক - সেদিক। বৃষ্টির পানি ও পয়:নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় কাঁদাপানিতে হাটুজল থাকে হোস্টেলের মাঠ। হোস্টেলে নেই বিশুদ্ধ পানি পানের কোন ব্যবস্থা, বাহিরে একটি টিউবওয়েল থাকলেও তা দীর্ঘদিন পড়ে আছে অকেজো হয়ে ফলে দূর থেকে বোতলে করে  পানির ব্যবস্থা করতে হয় ছাত্রদের।      
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ছাত্রদের কক্ষে ময়লা-আর্বজনা পড়ে স্তুপ হয়ে আছে র্দীঘদিন, হোস্টেলের পিছনে জানালার গ্রীল ঝোপ ঝাড় ও আগাছার দখলে। অধিকাংশ জানালার গøাস নেই, গ্রীলে আগাছা বেঁয়ে উঠে প্রবেশ করছে ছাত্রদের রুমে, পাশ্ববর্তী বাড়ির খোলা টয়লেটের বর্জ্য,মল-মুত্র, ডাস্টবিনের ময়লা-আর্বজনা কর্দমাক্ত, নর্দমার পানিতে মিশে  পঁচে র্দূগন্ধ ছড়ায় আশপাশসহ  ছাত্রদের কক্ষে যা পরিবেশ দূষনসহ ছড়ায় নানা রোগ জীবানু। হোস্টেলের পূর্বপাশে দেয়াল কেটে রাস্তায় হওয়ায় সাধারণ মানুষ চলাচল করে  হোস্টেলের ভিতর দিয়ে ।

স্থানীয় এক প্রভাবশালী হোস্টেলের পিছনের দেয়াল ভেঙ্গে মানুষ চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দিয়েছে কিছুদিন আগে। কলেজ রোডে হকার উচ্ছেদের পর হকারদের চৌকি, কাঠের রেক এবং ব্যবসায়িক বিভিন্ন মালামাল দখল করে আছে হোস্টেল মাঠ।  
 
নাম প্রকাশে অনেইচ্ছুক একাধিক আবাসিক ছাত্র জানায়, হোস্টেলে নেই মানসম্মত খাওয়ার ব্যবস্থা, অপরিচ্ছন্ন, নোংরা পরিবেশে রান্না হয় খাবার, তাও রান্নার পর খোলাস্থানে পড়ে থাকে প্রায় সবসময়ই ফলে অধিকাংশ ছাত্রই বাহিরে হোটেল-রেস্টুরেন্টে খেয়ে আক্রান্ত হচ্ছে গ্যাস্ট্রিকসহ নানা রোগ জীবানুতে। হোস্টেল ভবনের পিছনে নর্দমা ও ঝোপঝাড় থাকায় দিনের বেলাও মশার উৎপাতে কক্ষে বসে পড়া লেখা করা সম্ভব হয়না আর রাতে মশারীর ভিতরে বসে পড়া লেখা করতে হয়।

ছাত্ররা আরও অভিযোগ করে বলেন, হোস্টেলে বহিরাগত সমস্যা দীর্ঘদিনের, এদের আড্ডা, হৈ চৈ, আনাগোনা থাকে প্রায় সময়ই। বহিরাগতরা বিভিন্ন সময়ে আবাসিক ছাত্রদের মারধর করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে, কলেজ কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু তদারকির অভাবে দেখা দিয়েছে এসব সমস্যা। একজন প্রভাষককে হোস্টেল পরিদর্শকের দায়িত্ব দেয়া হলেও তিনি ছাত্রদের পড়া লেখাসহ আনুসাঙ্গিক খোজ-খবর রাখেন অনিয়মিত।

এ ব্যাপারে সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ ল.ম জাকির হোসেন বলেন, আগের হোস্টেল সুপার প্রভাষক মাজেদুল ইসলাম রিপন  হোস্টেলের  সমস্যা  সর্ম্পকে আমাকে ইতোপূর্বে অবহিত করেননি. আপনার  মাধ্যমে সমস্যা সর্ম্পকে জানতে পেরেছি, দ্রæত সমস্যা নিরশনে ব্যবস্থা গ্রহন করব এছাড়া বর্তমান হোস্টেল সুপার অন্য জায়গায় স্থানান্তর হওয়ায় নতুন হোস্টেল সুপার নিয়োগ দেয়া হয়েছে, আমার বিশ্বাস নতুন হোস্টেল সুপার যোগদানের পর এসব সমস্যা আর থাকবেনা।
হোস্টেল সংস্কার ও বহিরাগত অছাত্র প্রবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হোস্টেল পুন:সংস্কারের জন্য শিক্ষা প্রকৌশলী অফিসে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইস্যু করা হবে। আর বহিরাগত সমস্যা আগের চেয়ে এখন কমে গেছে, নতুন হোস্টেল সুপারকে এ সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে অবহিত করা হবে।

উল্লেখ্য, দেবিদ্বার  এসএ সরকারি কলেজ হোস্টেল ১৯৯৫ ইং সালে(১০ ই জুন শনিবার) ফ্যাসিলিটিজ ডির্পাটমেন্ট’র সহায়তায় দেবিদ্বার আসনের বিএনপি সরকারের সাবেক সাংসদ ইঞ্জি: মঞ্জুরুল আহসান মুন্সি ভিত্তি স্থাপন করেন।  

No comments:

Post a Comment